সাকিবের ফাঁদে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী, আত্মহত্যার চেষ্টা

সাকিবের ফাঁদে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী, আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে নবম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন মো. সাকিবুল হাসান। ওই ছাত্রী এখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু সাকিবকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উপায়ান্তু না দেখে থানায় ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। কিন্তু আসামি ধরতে পারছেন না পুলিশ। এই অবস্থায় অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় কী হবে তা ভেবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ছাত্রী।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বলছেন, অভিযুক্ত সাকিব মামলা দায়েরের আগেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আসামি গ্রেফতারে পুলিশের সব রকমের চেষ্ঠা চালাচ্ছে।

ভুক্তভোগী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কিচক ইউনিয়নের গাংগইট গ্রামের হোটেল শ্রমিক হতদারিদ্র্য বাবা ছফির উদ্দিনের মেয়ে কিচক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া (১৪)। তার সাথে একই গ্রামের মৌলভী শাহজানা আলীর ছেলে মো. সাকিবুল হাসান (১৮) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

সাকিব ধারিয়া গাংগইট ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবাও ওই মাদরাসার মৌলভী শিক্ষক।

ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, মো. সাকিবুল হাসান রাস্তা-ঘাটে একা পেয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ফুসলিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। চিকিৎসকের দেয়া আলট্রাসোনগ্রামের রিপোর্ট অনুযায়ী সুমাইয়া নামের ওই ছাত্রী সাড়ে তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বা।

ভুক্তভোগী জানায়, সাকিব তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন সময় একাধিকবার তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে দৈহিক মেলামেশা করেছে। আমি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে ভয়ভীতি দেখায়। আমি নিরুপায় হয়ে সাকিবের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছি।

সে আরো জানায়, সেই মামলা তুলে নিতে সাকিবের বড় ভাই সাহাদত দলীয় ক্যাডার নিয়ে বগুড়ার পীরগাছায় তার বাবার কাছ থেকে জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর গ্রহণের চেষ্ঠা করে। ভাই শফিকুলকে টাকার লোভ দেখিয়ে মামলা আপষো করতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

এদিকে পরিবারের প্রতি এমন জুলুম আর ভয়ভীতি সহ্যকরতে না পেরে মাত্র ১৪বছর বয়সী সুমাইয়া গত শনিবার (১১সেপ্টেম্বর) বিষের বোতল গিলিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে পৌছেঁ চিকিৎসাসেবায় সুমাইয়া অনেকটা সুস্থ্য। শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।

 

 

হাসপাতালের বেডে সুমাইয়া সাংবাদিকের জানান, গরীব ঘরের সন্তান হলেও মেধাবী ছাত্রী ছিলেন সে। চোখে মুখে স্বপ্নের আভায় শিক্ষা জীবন শেষ করে বড় চাকরি করার প্রবল ইচ্ছে আজ তার ম্লান হয়েছে সাকিবের কারণে। ছাত্রীর খাতার নাম কাটিয়ে সে এখন মা ! পেটের সন্তানের পরিচয় আর জীবনের আঘাত সহ্যকরার চেয়ে মৃত্যু অনেক আনন্দের তাই সে নিজের জীবন আত্মহুতি দিতে চান। মানবীয় বগুড়ার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট আকুল নিবেদনে সুমাইয়া এই অন্যয়ের বিচার চান। তবে অভিযুক্ত মাদরাসাছাত্র সাকিবের বাবা শাহজাহান আলীর দাবী ‘ঘটনা মিথ্যা।

গ্রামবাসী অনেকেই ঘটনা সঠিক বলে জানিয়েছেন। তারা জানান, ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে বিয়ের মাধ্যমে আপস-মীমাংসার চেষ্টা চালানো হয়েছে কিন্তু শাহজাহান মৌলভী কোনোভাবেই তাতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় থানায় ধর্ষণের মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন